কলাবাগানের ধর্ষণ, হত্যার ঘটনা নিয়ে কিছুই লিখিনি, বলিনি, শুধু শুনছি, দেখছি, পড়ছি। এমন বিষয়ে নিরব থাকা আমার স্বভাববিরুদ্ধ। তবুও থাকছি। কারণ, এই ঘটনাটির দিকে যখনই তাকাই, তখনই রেইনট্রি হোটেলের ঘটনার উপসংহারের কথা, তনুদের মত পরিবারের চাপা কান্না, হাহাকারের কথা মনে হয়।
এমন ধর্ষণ, হত্যার ঘটনার বিচার, শাস্তি আসলে শেষ পর্যন্ত দুপক্ষের লড়াইয়ে পরিণত হয়ে হারিয়ে যায়। যে পক্ষের ক্ষমতা বেশী, টাকা-পয়সার ভাণ্ডার বিশাল তারাই শেষ পর্যন্ত জিতে যায়। জয়টা আসে সাধারণত ধর্ষক, খুনিদের পক্ষেই।
আইন, সমাজ, সামাজিক মূল্যবোধ, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, আকাঙ্ক্ষা দিনশেষে মূল্যহীন হয়ে ডাস্টবিনে পরে থাকে। সবাই সবকিছু ভুলে যায়।কলাবাগানের এই পিশাচ এবং পিশাচের পরিবারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা অনেক লেখা, মন্তব্যও পড়েছি।
আসলে আমাদের আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বলে কিছু নেই। যা নেই তার প্রয়োগের দাবি তোলা হাস্যকর। কারণ, যেখানে সামাজিক, রাজনৈতিক প্রতিপত্তি, ক্ষমতা, টাকা, ধর্ষক, খুনিদের পাশে দাঁড়িয়ে রক্ষক হয়। সেখানে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিশেষ কোন বিধান, পথ সৃষ্টির কোন সম্ভাবনা নিকট কেন, সুদূর ভবিষ্যতেও দেখি না।
সরব ঘৃনা প্রকাশ করে মনের ভার যন্ত্রণা হালকা করুন, হাঁফ ছাড়ুন সমস্যা নেই। কেবল দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিটা চাইবেন না। মনে রাখবেন এই দেশে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান না থাকলেও খুন- ধর্ষণের মত অপরাধ করে পার পেয়ে যাবার শত শত দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা আছে।ধর্ষক, খুনিদের এবং তাদের যারা রক্ষক হয় তাদের ঘৃণা করুন। এদের প্রতি মানুষের মনে ঘৃণা জাগিয়ে তুলুন, প্রকাশ্যে অভিশাপ দিন। আজ না হোক দীর্ঘ মেয়াদে এই ঘৃণা জানানো, অভিশাপ দেয়া সমাজে ধর্ষক, খুনির সংখ্যা কমাতে সাহায্য করবে।
সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু, সহকারি অধ্যাপক, খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজ।